যীশুখ্রীষ্টের জন্মোৎসব

যীশুখ্রীষ্টের জন্মোৎসব

শোন দুনিয়ার শ্রান্ত ক্লান্ত

শোন শোন শোন
শোন দুনিয়ার শ্রান্ত ক্লান্ত ব্যথিত নর
তোমাদের মুক্তি লাগি' খুলেছে স্বর্গদ্বার।।
ঐ শোন দূরে রাখালের ঘরে জাগিছে কলোচ্ছাস
পাপের চিহ্ন মুছে গেল আজ
ঘুচিল অন্ধকার (৩)।।
ধর্মের নামে যুগ যুগ ধরি' জমিয়াছে যত পাপ
প্রেম ও সত্যের তীব্র দাহনে
হল(আজ) ছারখার (২)।।
মানুষে মানুষে জাতিতে জাতিতে
যত রেষারেষি যত বিভেদ
সাম্য মৈত্রী করুণার নীড়ে হল আজ একাকার ।।

জাগো জেরুশালেম, জাগো

জাগো জেরুশালেম, জাগো, ছড়াও তোমার দীপ্তি ।
স্বর্গ আজি ছড়ালো রশ্মি
দেশ-দেশান্তর করি' উজ্জ্বল
আনিল সত্য মহানন্দ, জাগো জেরুশালেম
এ যে প্রভুর আগমন । ।
১। প্রবীণেরা আচ্ছন্ন আঁধারে
জাতিসমূহ গভীর নিশীথে বিরাজে ।
তবু তোমার তরে আসিবেন প্ৰভু
তোমার উপর মহিমা তাঁহার জ্বলিবে ।
জাগো জেরুশালেম, জাগো, এ যে প্রভুর আগমন ।।
২। পূব হতে এল জনতা, সাথে উপহার বহু
জন্মিল শিশু রাজা
যুগ-যুগের প্রতীক্ষিত মুক্তিদাতা ।
জাগো, জাগো হে জেরুশালেম, এ যে প্রভুর আগমন ।।

কাঁপায়ে ঘন গিরি

কাঁপায়ে ঘন গিরি কান্তার বন
নবজাত শিশু করিল ক্রন্দন ।
কেহ না দেখিল, কেহ না বুঝিল
স্বয়ং ঈশ্বর হ'ল দীপ্যমান ।।

১। দূতেরা গাহিল তাঁর আগমনী
জানাল প্রণতি মূক বনানী ।
মধুর আরাবে পুরিল গগন
উঠিল জাগিয়া রাখালিয়াগণ । ।

২। অজ্ঞান তিমিরে রয়েছি মগন
কেমনে ডাকি তোমায় ঈশ-নন্দন ।
ব্যাকুল অন্তরে করি আকিঞ্চন
শুচি শুভ্র কর ঘৃণিত জীবন ।।

স্বর্গের সিঁড়ি বেয়ে তুমি

স্বর্গের সিঁড়ি বেয়ে তুমি, তুমি এসেছিলে
এসেছিলে মাটির ঘরে
অবশেষে ভালবেসে ক্রুশোপরে জীবন দিলে ।।

এ আকাশ-এ বাতাস
পাখীরা যে গান গেয়ে যায়
তারা তোমার জন্ম বারতা শোনায় ।
মেরীর কোলে গোয়াল ঘরে
মানুষ বেশে জন্ম নিলে ।।

জানি না - মানি না
আমি অন্য কিছু তো জানিনা
তোমায় ছাড়া কিছুই ভাবিনা ।
আমার দু'হাত ধরে তোমার করে
তুমিতো আপন করে নিলে।।

কুমারী মারীয়ার কোলে

কুমারী মারীয়ার কোলে
হাসেন যীশু ত্রাণেশ্বর ।
দারুণ শীতে ধরণীতে
জন্ম নিলেন পরাৎপর ।।
১। রাজাধিরাজ এলেন ধরায়
খড়বিচালি পাতার ডেরায়
স্বর্গীয় সোনার আভায়
আহা কি যে মনোহর ।।
২। পাপী তাপী দুঃখী জনা
অবিশ্বাসী অবুঝ মনা ।
চেয়ে দেখ তোর মানিক সোনা
অভয় দাতা দিবাকর।।
৩। সাঙ্গ করি' মন্দ মেলা
হেলা ফেলার সকল খেলা ।
আনন্দে ভাসিবে ভেলা
পূজি পুণ্য ত্রাণেশ্বর ।।

শীত মাঝে এলো বড়দিন

শীত মাঝে এলো বড়দিন, এলো বুঝি ঐ ফিরে ।
বাঙালীর ঘরে ঘরে কুয়াশার জাল ছিঁড়ে
এলো বুঝি ঐ ফিরে ।।
নতুন ধানের মায়ায় মাতাল যখন চাষীর কুল
নীলাম্বরীর ফাঁকে তখন বধূর হাসির দোল
বাংলা মায়ের ঘরে ঘরে উপচে মধু ক্ষরে ।।
ধূসর পোষের সোনালী ধরণী 'পরে
অলি-মধুপের পাগল পরাণী সুরে
মেঠো পথে সুধা ঝরে । ।
খুশীর বাগিচা বিষম মুখর দূর বনানীর ধারে
কাঁকন-বালার চতর চাহনি সুরমা নদীর পারে
রূপসী মেয়ের মুখের আঁচল উড়ে বাতাস 'পরে।।

ঘন কালো অন্ধকারের মাঝে

ঘন কালো অন্ধকারের মাঝে আলো দিল কে ।
মাটির মানুষ সৃষ্টি করে বলো প্রাণ দিল কে ।।
সুখ-শান্তি ভরা হিংসা-দ্বেষ হরা
যে পৃথিবী গড়ে উঠলো
রুক্ষ পাহাড় হতে সাগরেতে ছুটে যেতে
ঝরণা ঝরতে লাগলো ।
আলো বাতাস দিয়ে এমন মধুর করে
পৃথিবী গড়লো কে ।
পৃথিবী গড়লো (২) পৃথিবী গড়লো কে ।।

পথহারা পথিকেরা

পথহারা পথিকেরা, আয় ছুটে আয়, আয় ছুটে আয় ।
পেয়েছি ঐ পথের দিশা নতুন তারায়, নতুন তারায় । ।
লক্ষ কোটি শত তারকার ভীড়ে
আঁধারের বুকে চলে ধীরে ধীরে।
পাপী তাপী ব্যথিতেরে বারে বারে ফিরে ফিরে পথ সে দেখায় ।।
ঘোর আঁধার কেটে যাবে অমানিশা
পেলে তাঁরই দেখা মেলে পথদিশা ।
মরু মাঝে তৃষিতেরে জীবন তৃষায় সুধা বিলায় শুভ বারতায় । ।
শুভ সুদিন নীরব ভুবনের 'পরে
এলো শেষে হাজার বছর পরে ।
কেউ রবে না আর অসহায় পাপের পথে পাপের কারায় তাঁর এ সূচনায় ।।

তুমি পাপীর তরে আজ

তুমি পাপীর তরে আজ এসেছ, তুমি দুঃখীর তরে আজ এসেছ
তুমি বন্দিকে আজ মুক্তি দিতে মোদের জগতে এসেছ।।
আমরা এলাম প্রভু তোমার বেদীতে, আমরা এলাম আজ তোমায় পূজিতে
তুমি সুখের আসন ছেড়ে দুঃখের সাগর বেয়ে মোদের জীবনে এসেছ।।
আমরা নিলেম ব্রত তোমার বাণীতে, আমরা এলাম আজ তোমায় পূজিতে
তুমি স্বর্গের সুখ ছেড়ে মানব আকার নিয়ে মোদের জীবনে এসেছ ।।

দু'হাজার বছর

দু'হাজার বছর আগে
এক নীরব শীতের রাতে
একটি শিশু জন্মেছিল বেথলেহেমের গোশালে ।।
পাপ কালিমা মুছে দিয়ে
শান্তির বাণী প্রচারিতে
প্রেমের ডালি নিয়ে হাতে
যীশু এসেছেন এই ধরাতে।।
পরাৎপরের রাজা যিনি
এই ধরার ত্রাণেশ্বর তিনি
তবু দীনবেশে যীশু আসি'
সবার হৃদে দিল মুক্তো হাসি
(আজ) যীশুর জন্মদিনে
মিলি মোরা কোটি প্রাণে
হিংসা দ্বেষ ভুলে গিয়ে
প্রণতি জানাই তাঁর চরণে ।।

আজ প্রভু এসেছেন

আজ প্রভু এসেছেন আমাদের ক্ষুদ্র গোশালায়
তাই চল যাই চল যাই চল যাই চল যাই
পূজি গো তাঁহায় । ।
পৃথিবীতে রবে না দুঃখ দুর্দশা, শান্তি মমতায় ভরবে এ ধরা।।
পাপী আর পথ হারা পাবে যে তাঁর ক্ষমা
প্রেম ভক্তি তাঁরই দীক্ষা ।।

মুক্তিদাতার কাছে চলো

মুক্তিদাতার কাছে চলো । । (৩)
তিনি এলেন আজ ধরায় নেমে মুক্তির বাণী পূর্ণ করে
তিনি এলেন আজ পৃথিবীতে নতুন জীবন দেখিয়ে দিতে ।।
তিনি এলেন আজ মোদের মাঝে শান্তির বাণী পূর্ণ করে
তিনি এলেন আজ পৃথিবীতে প্রেমের জীবন দেখিয়ে দিতে।।

যীশু রাজা শিশু

যীশু রাজা শিশু হয়ে জন্ম নিলেন মেরীর কোলে
জীর্ণ গোশালায়, ঐ শীর্ণ গোশালায় ।
১। দূতগণে শুভ সংবাদ দিয়ে গেল রাখালগণে
মুক্তিদাতা জন্মেছেন আজ বেথলেহেমের গোয়ালঘরে
জীর্ণ গোশালায়, ঐ ছোট্ট গোশালায় । ।
২। রাখালেরা ত্বরা করে মেষ পাহাড়া ছেড়ে দিয়ে
শিশু যীশুকে যায় হেরিতে প্রণমিতে ভক্তিভরে
জীর্ণ গোশালায় ঐ দীন গোশালায় । ।
৩। পণ্ডিতগণে তারা দেখে উপঢৌকন নিয়ে হাতে
যীশু রাজা শিশুটিকে যায় তাহারা পূজিবারে
জীর্ণ গোশালায়, ঐ প্রেমের গোশালায় ।।

Melody-of-Prayer